ফেনসিডিলের কারণে প্রতিদিন হাজার কোটি টাকা ভারতে পাচার হচ্ছে। তাই ফেনসিডিল আমদানি করে রাজস্ব আয় বাড়াতে বঙ্গবন্ধু কন্যার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুল ইসলাম প্রধান।

নিজে এক বোতল ফেনসিডিল খেয়েছেন বলেও ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠানের বক্তব্যে জোর দাবি করে ওই নেতা বলেন, আমি নিজেও এক বোতল ফেনসিডিল খেয়েছি। ঘুম ছাড়া কিছুই হয় না।

জেলা পুলিশ সুপারের সামনে ফেনসিডিল খাওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে বেশ সমালোচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুল ইসলাম প্রধান।

সোমবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে আদিতমারী থানা আয়োজিত ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠানে এসপি’র উপস্থিতিতে এ বক্তব্য দেন তিনি।

আজিজুল ইসলাম প্রধান লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক ও সরপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, আজিজুল ইসলাম বলেন, সত্য বলবো তাতে জেল ফাঁস যা হয় হোক। ভারতে ফেনসিডিল মাত্র ৩৫ টাকা। এই ফেনসিডিলের কারণে প্রতিদিন হাজার কোটি টাকা ভারতে পাচার হচ্ছে। আমার তিন ছেলে মাস্টার্স পাস করেছে। তাদের নিষেধ করলেও গোপন জিনিসের ওপর আরও আগ্রহী হয়ে খাচ্ছে। ভারতে গিয়ে আমি নিজেও এক বোতল খেয়েছি, ঘুম ছাড়া কিছু হয় না। ভারতে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলেছি, দেশের তুষ্কা সিরাপের মতই ফেনসিডিল। যাতে ঘুমা ছাড়া কিছু নেই। অথচ এটার জন্য হাজার কোটি টাকা ভারতে পাচার হচ্ছে।

বিষয়টা বঙ্গবন্ধু কন্যার নজরে আনা যায় কি না? ভারত থেকে ৩৫ টাকায় ফেনসিডিল কিনে ৭০ টাকা ট্যাক্স নিয়ে ১০০ টাকায় বিক্রি করলেও ব্যবসা হবে রাজস্ব বাড়বে সরকারের। তাই বিষয়টি নিয়ে উচ্চ মহলে আলোচনা করা দরকার বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুল ইসলাম প্রধান।

তার এমন বক্তব্যে অনুষ্ঠানের সবাই অট্টহাসিতে প্রতিবাদ জানান। এ সময় কৌশলে তার বক্তব্য থামিয়ে দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুল ইসলাম। এমন বক্তব্যে হতভম্ব হয়ে পড়েন খোদ প্রধান অতিথি পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা।

আমদানি নিষিদ্ধ এবং যুব সমাজ ধ্বংসকারী ফেনসিডিল আমদানিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা আওয়ামী লীগ নেতার এ বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় ওঠে। যে ফেনসিডিল তথা মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী বারবার প্রশাসনকে কঠোর হতে নির্দেশনা দিচ্ছেন। সেই সরকারের তৃণমূল নেতা ফেনসিডিল আমাদানিতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রশাসনের সামনে ফেনসিডিল খাওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।